রংপুর সরকারি কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টের ক্লাস পার্টি উদযাপন
রংপুর সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টের ২০১৯-২০ সেশনের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা একটি বর্ণাঢ্য ক্লাস পার্টির আয়োজন করে দিনটি ছিল ১৬ আগস্ট ২০২৩ । এই বিশেষ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয় কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টের শ্রেনী কক্ষে, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের তৃতীয় বর্ষের শেষ ক্লাসটি আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপন করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টের প্রধান প্রফেসর ড. মো. সাইফুল রহমান এবং আমাদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ মাগফুর হোসেন, সহকারী অধ্যাপক জনাব মোঃ হাজজাজ আলী ও জনাব মোছাঃ আরজুমান্দ বানু এছাড়াও প্রভাষক জনাব প্রদীপ কুমার মিত্র সহ ডিপার্টমেন্টের অন্যান্য সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ । অনুষ্ঠানে সম্মানিত শিক্ষক মহাদয় ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি পুরো আয়োজনটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মো. সাইফুল রহমান উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে আন্তরিকভাবে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের এই আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি শিক্ষার্থীদের জীবনে শিক্ষা ও নৈতিকতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন এবং তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। তিনি বলেন, “তোমরা দেশের ভবিষ্যৎ। তোমাদের হাতেই দেশের নেতৃত্বের ভার। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে তোমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর অন্যান্য শিক্ষকরাও পর্যায়ক্রমে বক্তব্য প্রদান করেন। তারা শিক্ষার্থীদের কষ্টার্জিত সাফল্যকে প্রশংসা করেন এবং তাদের ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানান। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সৎ, দায়িত্বশীল ও নৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে উঠার আহ্বান জানান। তারা বলেন, “শিক্ষা কেবলমাত্র ডিগ্রি অর্জন নয়, এটি একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া, যা মানুষের ব্যক্তিত্ব, মূল্যবোধ এবং সামাজিক দায়িত্বশীলতা গড়ে তোলে।” শিক্ষকদের বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে এবং তারা তাদের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
শিক্ষকদের বক্তব্য শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ পান। সাংস্কৃতিক পর্বটি ছিল পুরো ক্লাস পার্টির অন্যতম আকর্ষণ। শিক্ষার্থীরা গান, নাচ, কবিতা আবৃত্তি এবং নাটক মঞ্চস্থ করেন। বিশেষ করে, তৃতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিনীত মধুর কন্ঠে বাঙালীর প্রিয় গান দর্শকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলে। গান গুলো সমাজের বিভিন্ন সমস্যার উপর ভিত্তি করে রচিত ছিল, যা শিক্ষার্থীদের সামাজিক সচেতনতা এবং দায়িত্ববোধের প্রতিফলন ঘটায়। এছাড়াও, সকল ছাত্র-ছাত্রীরাও তাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন, যা পুরো অনুষ্ঠানে এক নতুন মাত্রা যোগ করে।
সাংস্কৃতিক পর্ব শেষে শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষকরা একসাথে দুপুরের খাবারের জন্য বসেন। খাবার পরিবেশন করা হয় পার্টির আয়োজনকারীদের পক্ষ থেকে, এবং এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে একটি আন্তরিক এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ। খাবারের পর শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষক ও সহপাঠীদের সাথে আলাপ-আলোচনায় মগ্ন হয়ে যান। শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা জীবন ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে শিক্ষকদের পরামর্শ নেন এবং সহপাঠীদের সাথে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাদের তিন বছরের শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করেন। তারা তাদের প্রথম দিনের কথা, পরীক্ষার প্রস্তুতি, বন্ধুদের সাথে কাটানো মধুর সময়গুলো এবং বিভিন্ন শিক্ষা সফরের স্মৃতিচারণ করেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন, এবং তারা তাদের শিক্ষাজীবনের এই বিশেষ সময়টি মনে রাখার জন্য একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে প্রফেসর ড. মো. সাইফুল রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, “তোমাদের এই ক্লাস পার্টি আমাদের সকলের জন্য একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। আমি আশা করি তোমরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করবে এবং আমাদের ডিপার্টমেন্টের নাম উজ্জ্বল করবে।” সমাপনী বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীরা গ্রুপ ফটো সেশনে অংশ গ্রহন করে এবং যা তাদের এই বিশেষ দিনের স্মৃতি হিসেবে থাকবে। এই ছবি তাদের শিক্ষাজীবনের একটি মধুর স্মৃতি হিসেবে রয়ে যাবে। পরিশেষে, শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে এবং একে অপরের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
এই ক্লাস পার্টি রংপুর সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন হিসেবে থেকে যাবে। তাদের জীবনের এই বিশেষ মুহূর্তগুলো তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। এই ক্লাস পার্টি শুধুমাত্র একটি উৎসবই ছিল না, এটি ছিল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার একটি সুযোগ।
এই ধরনের অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের মধ্যে একতা বৃদ্ধি করে এবং তাদেরকে সৃজনশীল হতে উৎসাহিত করে। এই পার্টির স্মৃতি চিরদিন তাদের মনে লালিত হয়ে থাকবে।